ক্লাব বিশ্বকাপের বধ্যভূমিতে বায়ার্নের দশগুণ গর্জন
বায়ার্নের এই ১০-০ গোলের জয় কেবল একটি ম্যাচের ফল নয়, এটি ইতিহাসে ঠাঁই পাওয়া এক অবিস্মরণীয় ঘোষণা। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোল এবং সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়—দুটি রেকর্ডই আজ ভাঙলো একই দিনে, একই মাঠে।

স্পোর্টস ডেস্কঃ
রাতের আকাশে যখন তারা একে একে জ্বলে ওঠে, তখন মরুর বুকে আরবের বাতাসে ভেসে আসে এক নিঃশব্দ বিস্ফোরণ। সেই বিস্ফোরণের নাম— বায়ার্ন মিউনিখ। ক্লাব বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে নিউজিল্যান্ডের ক্ষুদ্র ক্লাব অকল্যান্ড সিটি যেন পরিণত হয়েছিল এক ব্যর্থ প্রতিরক্ষার কেল্লায়, যাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিল ইউরোপের দানবরা—দশবার।
বায়ার্নের এই ১০-০ গোলের জয় কেবল একটি ম্যাচের ফল নয়, এটি ইতিহাসে ঠাঁই পাওয়া এক অবিস্মরণীয় ঘোষণা। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোল এবং সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়—দুটি রেকর্ডই আজ ভাঙলো একই দিনে, একই মাঠে।
এর আগে কোনো দল ৬টির বেশি গোল দিতে পারেনি এই প্রতিযোগিতায়, কিংবা ৫ গোলের ব্যবধানে জিততে পারেনি। সেইসব পরিসংখ্যান আজ হয়ে গেলো অতীতের প্রত্নফসিল।
প্রথমার্ধেই যখন স্কোরবোর্ডে ৬-০ লেখা, তখন অনেকেই হয়তো চোখ কচলেছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে যোগ হলো আরও চার গোল, একত্রে দশ। গোলপোস্টের প্রতিটি কোণ যেন জানিয়ে দিল, ফুটবল কেবল খেলা নয়, এটি এক শিল্প, এক নিপুণ নির্মাণ—যার নির্মাতা আজ বায়ার্ন।
জামাল মুসিয়ালা, যিনি শুরু করেছিলেন বেঞ্চে বসে, নামলেন বদলি হিসেবে, আর শেষ করলেন হ্যাটট্রিক নিয়ে। কিংসলি কোম্যান, মিশেল ওলিসে ও টমাস মুলার—তাঁরা প্রত্যেকে করলেন দুইটি করে গোল। একটি গোল যোগ করলেন সাচা বোয়ে।
অকল্যান্ডের পেনাল্টি বক্স হয়ে উঠেছিল যেন জার্মান বাহিনীর ক্যাম্প। বল দখলে বায়ার্নের নিয়ন্ত্রণ ছিল ৭২ শতাংশ, শট নিয়েছে ৩৩টি, যার মধ্যে ১৭টি ছিল লক্ষ্যে। তার ১০টি পরিণত হয়েছে গোলের উল্লাসে। বিপরীতে, অকল্যান্ড নিয়েছিল মাত্র দুটি শট, একটিই মাত্র লক্ষ্যে।
তবুও, অবিশ্বাস্য এই জয়ও বায়ার্নের ইতিহাসের সর্বোচ্চ জয় নয়। ১৯৯৭ সালে জার্মান কাপে ওয়াল্ডবার্গকে ১৬–১ গোলে হারানো জয়টিই রয়ে গেল ক্লাবটির রেকর্ড হিসেবে।
তবুও আজকের রাত, এই জুনের ১৬ তারিখ, বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে লিখে রাখা থাকবে এক সাহসী অধ্যায়ের মতো। বায়ার্ন শুধু জেতেনি, তারা ঘোষণা দিয়েছে—শৈল্পিক ফুটবলের এক নিখুঁত মানচিত্র।
এবি/সিএস