নির্বাচনি আচরণবিধির খসড়া চূড়ান্ত, আসছে নতুন নিয়ম-কানুন
Representation of the People Order (RPO) এর ৯১(ঙ) ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিলের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের ব্যবহারকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং পরিবেশবান্ধব প্রচারসামগ্রী ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনি প্রচারে শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ ৬০ ডেসিবলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। আগের নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করে এবার টিশার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদি নির্দিষ্ট সীমায় ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সরকারি সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো ও রেস্ট হাউস ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

আন্তঃবাণী প্রতিবেদকঃ
নির্বাচনি আচরণবিধির খসড়া চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। খসড়ায় এবার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নির্বাচনি পোস্টার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। তবে ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, লিফলেট, হ্যান্ডবিল এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে। প্রচারের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সপ্তম কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল মো. সানাউল্লাহ এসব তথ্য জানান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অন্য কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।
আচরণবিধির খসড়ায় গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে Representation of the People Order (RPO) এর ৯১(ঙ) ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিলের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের ব্যবহারকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং পরিবেশবান্ধব প্রচারসামগ্রী ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনি প্রচারে শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ ৬০ ডেসিবলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। আগের নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করে এবার টিশার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদি নির্দিষ্ট সীমায় ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো ও রেস্ট হাউস ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এবার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যদের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের জন্যও বিধিনিষেধ প্রযোজ্য করা হয়েছে। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বা সদস্য হিসেবে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই তাকে পদত্যাগ করতে হবে, যাতে নির্বাচন কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ থাকতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারও এবার আচরণবিধির আওতায় এনে সেটির একটি নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকার করে হলফনামা জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের একটি যৌথ প্ল্যাটফর্ম থেকে নির্বাচনি ইশতেহার পাঠের সুযোগ রাখা হয়েছে, এবং নির্বাচনি সংলাপ আয়োজনের বিষয়টি কমিশনের অনুমোদন পেয়েছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান আগের মতোই বহাল থাকছে। তবে জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। পোস্টার ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ব্যানারে শুধুমাত্র প্রার্থীর নিজের ছবি ব্যবহার করা যাবে, অন্য কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না। সাদা-কালো রঙের বিধানও বহাল থাকবে।
কমিশনার জানান, খসড়াটি কমিশনের অনুমোদন পেলেও এটি এখনো চূড়ান্ত নয়। RPO সংশোধনের ওপর নির্ভর করে এতে পরিবর্তন আনা হতে পারে। স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজন হলে নতুন বিষয় যুক্ত বা সংশোধনও করা হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে খসড়াটি প্রকাশ করা হবে নীতিগত অনুমোদন হিসেবে।
এবি/ এসএফ