অবিরাম সাইরেন, একের পর এক বিস্ফোরণ ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য
মধ্যপ্রাচ্যে ফের অশান্তির ছায়া। ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ইরানের ছোড়া শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হেনেছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ২৩ জুন ২০২৫ মধ্যপ্রাচ্যে ফের অশান্তির ছায়া। ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ইরানের ছোড়া শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হেনেছে। দেশের সেন্ট্রাল ও দক্ষিণাঞ্চলে অবিরাম সাইরেন বাজতে শোনা গেছে, আর একের পর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ কাঁপিয়ে দিয়েছে বহু শহর।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, সোমবার ভোররাতে ইরানের দিক থেকে অন্তত ৪৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি আঘাত হানে আসদোদ, লাচিস ও পশ্চিম জেরুজালেমের পার্শ্ববর্তী এলাকায়। রাজধানী জেরুজালেমে সাইরেন বাজা মাত্রই সংসদ সদস্যদের (নেসেট) নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সাংবাদিকদের রিপোর্টিংয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায়, অনেক সংবাদকর্মী পাশের দেশ জর্ডান থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলার সময় টানা ৩৫ মিনিট ধরে সাইরেন বেজেছে এবং প্রবল বিস্ফোরণ হয়েছে একাধিক স্থানে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।
১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় একটি বড় ধরনের বিমান হামলা চালায়। তেহরানের পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র, সামরিক ঘাঁটি এবং আবাসিক এলাকায় চালানো এই হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৪০০ জন। নিহতদের মধ্যে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক রয়েছেন। এই ঘটনার পর ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি’ নামে পাল্টা হামলার পরিকল্পনা করে। গত ১০ দিনে ইসরায়েলের ওপর মোট ২১ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানি সংবাদমাধ্যম। সর্বশেষ হামলায় ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, গতকাল চালানো এক হামলায় কোনো সাইরেনই বাজেনি। পরবর্তীতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করে, এটি একটি ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল—নিজেদের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র নয়।
বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে তা মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও প্রভাব ফেলতে পারে। রাশিয়া কয়েক দফায় মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, পারমাণবিক ছায়ার নিচে গড়ে ওঠা এই উত্তেজনা যদি আরও তীব্র হয়, তবে গোটা বিশ্বের নিরাপত্তাই হুমকির মুখে পড়বে।
এবি/এসিডাব্লিউ
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আল জাজিরা,
