ইসরায়েলের হামলায় অস্থিতিশীল ইরান, সীমান্তে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির আশঙ্কায় পাকিস্তান
ইরানে ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তান গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আশঙ্কা করছে, দেশটির সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে সক্রিয় জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো ইরানে সম্ভাব্য শাসনব্যবস্থার ভাঙনের সুযোগ নিতে পারে।

আন্তঃবাণী প্রতিবেদকঃ
ইরানে ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তান গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আশঙ্কা করছে, দেশটির সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে সক্রিয় জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো ইরানে সম্ভাব্য শাসনব্যবস্থার ভাঙনের সুযোগ নিতে পারে।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির এই আশঙ্কার কথা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে তুলে ধরেন। বৈঠক শেষে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “তারা (পাকিস্তান) কিছুতেই খুশি নয়।”
ইরানে ইসরায়েলের চলমান হামলা দেশটির পারমাণবিক স্থাপনার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পাকিস্তান এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকাত আলী খান বলেছেন, “ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ ইরানে যা ঘটছে, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুতর একটি বিষয়। এটি গোটা অঞ্চলকে নিরাপত্তাহীনতায় ফেলছে।”
দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে বহু বছর ধরেই সক্রিয় রয়েছে উগ্রবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী। এর মধ্যে রয়েছে জৈশ আল-আদল (Jaish al-Adl) নামক একটি সুন্নি জিহাদী সংগঠন, যা পাকিস্তানের ভেতর থেকেই পরিচালিত হয় এবং ইরানে সক্রিয় থাকে। সম্প্রতি তারা ইরানে অস্থির পরিস্থিতিকে ‘সুবর্ণ সুযোগ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, “আমরা ইরানের সকল জনগণকে—বিশেষ করে বেলুচিস্তানের মানুষ ও সেনাবাহিনীকে—প্রতিরোধে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই।”
এদিকে পাকিস্তান উদ্বিগ্ন যে, ইরানে অবস্থানরত বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলিও এবার পাকিস্তানে হামলা বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রাক্তন পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত মলিহা লোধি সতর্ক করে বলেছেন, “অশাসিত অঞ্চলের জন্ম হলে, তা জঙ্গিগোষ্ঠীর জন্য উর্বর ক্ষেত্র হয়ে উঠবে।”
উল্লেখ্য, পাকিস্তান এরই মধ্যে ভারতের সঙ্গে এক মাস আগে চারদিনব্যাপী সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছিল এবং আফগানিস্তান সীমান্তেও রয়েছে তালেবান শাসনের কারণে চরম অস্থিতিশীলতা। এই প্রেক্ষাপটে ইরান সীমান্তকেও অস্থির হয়ে উঠতে দেখলে তা পাকিস্তানের জন্য এক ভয়াবহ নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
এবি/সিএস