গলে টাইগারদের রান পাহাড়, শেষ বিকেলে ছন্দপতন
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪৮৪ রান।

স্পোর্টস ডেস্কঃ
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় গড়ে উঠছে এক মহাকাব্যিক ইনিংস। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪৮৪ রান। আলোকস্বল্পতায় খেলা আগেভাগে শেষ হয়ে গেলেও, আগের ১৩০ ওভারে যা ঘটেছে, তা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।
প্রথম দিনে তাণ্ডব চালানো মুশফিকুর রহিম দ্বিতীয় দিনেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন। ৩৫০ বল খেলে ১৬৩ রানের এক অসাধারণ ইনিংস খেলেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। তাঁর ইনিংসে ছিল ১৭টি চারের মার। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন মুশফিক। রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলের কাছে হার মানতে হয় তাঁকে। এর মাধ্যমে ভাঙে ১৪৯ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি।
তাঁর সঙ্গী হয়ে ক্রিজে আসেন লিটন দাস। শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন লিটন। ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করে দ্রুত রান তুলতে থাকেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে আটকে যান তিনি—৯০ রানে থামতে হয় তাঁকে। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে তৃতীয়বার নব্বইয়ের ঘরে থামলেন লিটন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রকম অভিশপ্ত নব্বইয়ের ঘরে সবচেয়ে বেশি বার আউট হয়েছেন কেবল মুশফিকই (৪ বার)।
এর আগে নাজমুল হোসেন শান্ত ১৪৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাথুসের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন, আর তাতে ভাঙে মুশফিক–নাজমুলের রেকর্ড ২৬৪ রানের জুটি। শান্তের ইনিংসও ছিল ধৈর্য, পরিণত মনোভাব আর দূরদর্শিতার প্রতিচ্ছবি।
দ্বিতীয় দিন শেষ হওয়ার আগে জাকের আলী, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান দ্রুত ফিরে গেলে হঠাৎ ছন্দপতনের শঙ্কা দেখা দেয়। মিলন রত্নায়েকে বাংলাদেশের মিডল ও লোয়ার অর্ডারে তাণ্ডব চালান। ১৬ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা।
তবু প্রশ্ন এখন একটাই—৫০০ পার হবে তো?
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস দাঁড়িয়েছে ৪৮৪/৯–এ। শেষ উইকেটের লড়াইয়ে হয়তো আর কিছু রান যোগ হবে, কিংবা হয়নি—তবু এই স্কোরবোর্ডই বলে দেয় টাইগারদের ব্যাটিং শক্তি।
আলো-বৃষ্টি আর মেঘে মুড়ে থাকা গলের আকাশে বাংলাদেশের এই ইনিংস যেন রোদেলা দুপুরের গল্প। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের জন্য এটি কেবল এক ইনিংস নয়, আত্মবিশ্বাস ফেরানোর এক ঘোষণাও।
লড়াই এখনও বাকি। বল হাতে কেমন জবাব দেয় বাংলাদেশ, তা-ই দেখার পালা।
এবি/সিএস