শান্তর ব্যাটে সেঞ্চুরি , বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রত্যাবর্তন

স্পোর্টস ডেস্কঃ

গলে টেস্ট, বাংলাদেশের জন্য যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র। শুরুর ধাক্কায় যখন মনে হচ্ছিল আবারও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে, তখনই ব্যাট হাতে শান্তর নাম যেন হয়ে উঠল আশার নামান্তর।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২৫-২৭ মৌসুমের সূচনায় গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। তবে সূচনার কড়াকড়িতে দমবন্ধ হওয়ার জোগাড়। ইনিংসের মাত্র পঞ্চম ওভারেই এনামুল হক বিজয় বিদায় নেন শূন্য রানে, ফার্নান্দোর এক নিখুঁত সুইং ডেলিভারিতে। এরপর সাদমান (১৪) ও মুমিনুল (২৯) থারিন্দুর বোলিংয়ে দু’টি পরপর বলে ধরা পড়েন প্রথম স্লিপে। scoreboard তখন বলছিল ৩ উইকেটে ৪৪ রান—বাংলাদেশের টপ অর্ডারের এক করুণ চিত্র।

কিন্তু তখনো গল্পের পাতা শেষ হয়নি।

নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম যেন হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের আত্মার দুই স্তম্ভ। চাপ সামলে তারা যখন ব্যাটে বল রাখতে শুরু করলেন, তখন গলের সূর্যও যেন একটু কম ঝাঁঝালো হলো। দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়ে অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন তারা। প্রবাথ জয়সুরিয়ার এক ওভারে দুজনেই তুলে নেন ফিফটি—শান্ত তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ এবং মুশফিক তার ২৮তম ফিফটি করেন।

শুধু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নয়, এই দুজন গড়েন টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম শতরানের জুটি, যা তৃতীয় সেশনে গড়ায় ১৫০ ছুঁয়ে যায়। ২৬৬ বলে তারা গড়েন এই পার্টনারশিপ, যেখানে ধৈর্য, দৃঢ়তা আর অভিজ্ঞতার মিশেল স্পষ্ট।

অবশেষে শান্তর ব্যাটে আসে কাঙ্ক্ষিত শতক—২০২ বলে ১১টি চার ও একটি ছক্কায় ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি। একসময়ের ‘সদা সম্ভাবনাময়’ শান্ত আজ হয়ে ওঠেন দলের ব্যাটিংয়ের নায়ক। অপরপ্রান্তে থাকা অভিজ্ঞ সৈনিক মুশফিক ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন নিজের শতকের পথে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৭৩ রান। গলের পিচে যা একটি সম্মানজনক স্কোর এবং শক্ত ভিত্তি।

এই দৃঢ়তায় একদিকে যেমন শান্তর ধৈর্যের প্রশংসা প্রাপ্য, তেমনি অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের উপস্থিতি গোটা দলের মানসিকতায় ছড়িয়েছে এক আত্মবিশ্বাসের বারুদ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই নতুন যাত্রায় গলের প্রথম পরীক্ষাতেই বাংলাদেশ দিয়েছে প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট ইঙ্গিত—তারা হার মানতে আসেনি, বরং ইতিহাস লিখতে চায় নতুন করে।

এবি/ সিএস