ইরান-ইসরায়েল সংঘাত পঞ্চম দিনে, তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধের পঞ্চম দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নাটকীয় বার্তায় ইরানি নাগরিকদের দ্রুত তেহরান ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

Jun 17, 2025 - 10:55
 0  2
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত পঞ্চম দিনে, তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প

আন্তঃবাণী নিউজ ডেস্কঃ

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধের পঞ্চম দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নাটকীয় বার্তায় ইরানি নাগরিকদের দ্রুত তেহরান ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'ট্রুথ সোশ্যালে' লেখেন, "ইরানের উচিত ছিল আমি যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বলেছিলাম, সেখানে স্বাক্ষর করা। কী লজ্জা, কী পরিমাণ মানুষের জীবনের অপচয়! সহজ করে বলি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না। সবারই উচিত দ্রুত তেহরান ছেড়ে চলে যাওয়া।"

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, জি৭ সম্মেলনের সমাপ্তির এক দিন আগেই ট্রাম্প কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসেছেন। নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তার। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পের আগেভাগে সম্মেলন ত্যাগকে ইতিবাচক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে, এবং এখন মূল লক্ষ্য হলো ইরান ও ইসরায়েলকে রাজি করানো।"

এদিকে তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণ ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। পারমাণবিক স্থাপনা সমৃদ্ধ নাতাঞ্জেও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল। ইরান দাবি করেছে, এ পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। অপরদিকে, ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক হারিয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির মুখে ৩ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনই ইরানে হামলা চালাতে যাচ্ছে না। বরং, একটি নতুন পরমাণু চুক্তির মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের পথ খোলা রাখা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জোর দিয়ে বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থ রক্ষা করবে, কিন্তু এখনো আমরা কূটনৈতিক সমাধানের আশা করছি।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানান, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ উদ্দেশ্যে ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিল। ওই সময় পেরিয়ে যাওয়াতেই শুক্রবার প্রথম হামলা শুরু হয়। আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নাতাঞ্জের প্রায় ১৫ হাজার সেন্ট্রিফিউজ ধ্বংস হয়েছে।

চীন, সৌদি আরব, ওমান এবং কাতার যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতায় সক্রিয়। ইরান জানিয়েছে, তারা আলোচনায় রাজি, তবে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হলে পাল্টা প্রতিক্রিয়াও বন্ধ হবে না।

ট্রাম্প জি৭ সম্মেলনের ফাঁকে বলেন, “আমি এখনো মনে করি একটি চুক্তি হবে। ইরানের উচিত এখনই আলোচনায় ফিরে আসা। না হলে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।”

এদিকে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে আকাশসীমা বন্ধ হওয়ায় চীনা দূতাবাস তাদের নাগরিকদের দ্রুত ইসরায়েল ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্য যেন আবারও এক বিস্ফোরক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। বিশ্ব এখন অপেক্ষা করছে—এই সংঘাত একটি কূটনৈতিক সমাধানের দিকে যায়, নাকি আরও ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নেয়।

এবি/সিএস