‘৩ দিনের সুযোগ দিন, নির্দোষ প্রমাণে ব্যর্থ হলে ফাঁসি দিন’ — আদালত চত্বরে স্ত্রীর আকুতি
বিকাশ আরও উল্লেখ করেন, একজন নিরপরাধকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া মানে তার পুরো পরিবারকে মৃত্যুর সাজা দেওয়া। "গরিবের কোনো শুনানি নেই, কোনো কান্না কেউ বোঝে না। শুধু একবার উচ্চ আদালতে দাঁড়ানোর সুযোগ চাই।"

আন্তঃবানী নিউজ ডেস্ক:
মাদক মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুলনার বিকাশচন্দ্র বিশ্বাস ছয় বছর ধরে কনডেম সেলে বন্দি। নিজের নির্দোষত্ব প্রমাণে আদালতের কাছে তিন দিনের সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। একই দাবিতে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে আকুতি জানিয়েছেন তার স্ত্রী রিমা বিশ্বাস—"তিন দিনের সুযোগ দিন, আমার স্বামী নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন। ব্যর্থ হলে ফাঁসি দিন।"
২০২১ সালের ৭ অক্টোবর খুলনার একটি মাদক মামলায় বিকাশচন্দ্র বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড দেয় নিম্ন আদালত। সেই রায় কার্যকরের অপেক্ষায় গত তিন বছর ধরে কনডেম সেলে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। তার দাবি, মামলাটি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়নি, তার পক্ষে কোনো দক্ষ আইনজীবী ছিলেন না, আর তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
বিকাশচন্দ্র কারাগার থেকে নিজ হাতে ছয় পাতার একটি চিঠি লিখে প্রধান বিচারপতির দপ্তরে পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন,
"একজন মানুষ যখন অথই সাগরে পড়ে, তখন একটি পাতাও তার কাছে আশার প্রতীক হয়ে ওঠে। আমিও সেই দিশেহারা পথিক। তিন দিনের মধ্যে নিজেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে দেব। ব্যর্থ হলে আমার ফাঁসি কার্যকর করুন।"
বিকাশ আরও উল্লেখ করেন, একজন নিরপরাধকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া মানে তার পুরো পরিবারকে মৃত্যুর সাজা দেওয়া।
"গরিবের কোনো শুনানি নেই, কোনো কান্না কেউ বোঝে না। শুধু একবার উচ্চ আদালতে দাঁড়ানোর সুযোগ চাই।"
তার স্ত্রী রিমা বিশ্বাস জানান, তার স্বামী নির্দোষ হলেও তাদের পক্ষে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না। বর্তমানে তারা ব্যারিস্টার শিশির মনিরের শরণাপন্ন হয়েছেন, যিনি তাদের কোনো সম্মানি না নিয়েই আইনি সহায়তা দিচ্ছেন। রিমার ভাষায়,
"আমি আর আমার মা খুলনা কোর্টের সামনে ডিম বিক্রি করি। এই কষ্টের জীবন থেকে শুধু মুক্তি চাই না, চাই ন্যায্য বিচার।"
বিচার বিভাগের কাছে এই পরিবারের করুণ আবেদন এখন বিবেচনার অপেক্ষায়।
এবি/এসএফ