ঘুরে দাঁড়াল টাইগাররা: নাঈমের পাঁচ উইকেট, শান্ত-সাদমানের নির্ভরতা
শুরুটা হয়েছিল হতাশা আর চাপে। কিন্তু দিন শেষে গলের চতুর্থ দিনটা হয়ে উঠল বাংলাদেশের। সেই পুরনো ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, আর সেই গল্পের মূল চরিত্র এবার নাঈম হাসান।

স্পোর্টস ডেস্কঃ
শুরুটা হয়েছিল হতাশা আর চাপে। কিন্তু দিন শেষে গলের চতুর্থ দিনটা হয়ে উঠল বাংলাদেশের। সেই পুরনো ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, আর সেই গল্পের মূল চরিত্র এবার নাঈম হাসান। অফ স্পিনের মোহজালে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং গুটিয়ে দিয়ে ম্যাচে ফেরার পথ রচনা করলেন তরুণ এই স্পিনার। আর ব্যাটিংয়ে স্বস্তির আভাস ছড়িয়ে প্রতিরোধের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠলেন সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫৭ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান। শান্ত ৫৬* ও মুশফিক ২২* রানে অপরাজিত। সফরকারীদের লিড এখন ১৮৭। যে পথে হাঁটছে ম্যাচ, সেখানে পঞ্চম দিন এক সেশন সাবলীলভাবে কাটিয়ে দিলে বাংলাদেশ হারের সব পথ প্রায় বন্ধ করে দিতে পারবে। তবে সে পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সময়। বাংলাদেশের লিড যত বড় হবে, জয় ততটাই স্বপ্নে পরিণত হবে। শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করার মতো সময় তখন নাও থাকতেও পারে।
এর আগে সকালে শ্রীলঙ্কার ইনিংস থামে ৪৮৫ রানে। দ্বিতীয় দিনের শেষে ৩৬৮/৪ থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে এগোচ্ছিল স্বাগতিকরা। তবে তৃতীয় সেশনে ঘুরে দাঁড়িয়ে মাত্র ২০ রানেই শেষ ৪ উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের বোলাররা। নাঈম হাসান নেন ৫ উইকেট, যার মধ্যে এক ওভারে দুটি মূল্যবান শিকার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার চতুর্থ ৫ উইকেট প্রাপ্তি, শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম।
সেই ১০ রানের লিড নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে নামে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে ইনামুল হক ফেরেন ৪ রানে। তিন ইনিংস মিলিয়ে এখনো ছুঁতে পারেননি দু’অঙ্ক। এরপর মুমিনুল হকও ফিরলেন ১৪ রানে। তবে সাদমান ইসলামের ব্যাটে দেখা মেলে ধৈর্য আর দৃঢ়তার। ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি ১২৬ বলে, তুলে নেন ৭টি চার।
তার সঙ্গে ব্যাটিংয়ে ক্রমেই জমে উঠতে থাকেন শান্ত। প্রথম ইনিংসে শতক হাঁকানো অধিনায়ক এবারও ব্যাট হাতে দায়িত্বশীল। ১০৬ বলে তুলে নেন অর্ধশতক, চতুর্থ দিনের আলো নিভে আসার সময় অপরাজিত থাকেন ৫৬ রানে।
চতুর্থ দিনের শেষ আলোয় যখন গলের সবুজ গ্যালারি ফিকে হয়ে আসে, তখন বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে আলোর রেখা। সামনে একদিন সময়। হাতে রয়েছে শক্তিশালী মিডল অর্ডার। এক সেশন নিরাপদ ব্যাটিং করে এরপর যদি আগ্রাসন আনা যায়, তাহলে শ্রীলঙ্কার সামনে চাপ সৃষ্টি করাও অসম্ভব নয়। যদিও ড্র এই মুহূর্তে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পরিণতি।
তবে যেভাবেই হোক, বাংলাদেশের এই ঘুরে দাঁড়ানো প্রমাণ করে—ওরা এখন আর সহজে হারে না। বিদেশের মাঠে, ইতিহাসের গ্লানিকে পাশ কাটিয়ে ওরা তৈরি করছে নতুন অধ্যায়। গলে এই দিনটা তাই গর্বের দিন—নাঈমের পাঁচ উইকেট, শান্তর ব্যাট আর সাদমানের প্রতিরোধের গর্ব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৯৫
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৮৫ (নাঈম ৫/১২১)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ১৭৭/৩ (সাদমান ৭৬, শান্ত ৫৬*, মুশফিক ২২*)
পঞ্চম দিনে যে চিত্র:
বাংলাদেশ চাইবে আরও অন্তত ৭০-৮০ রান তুলে লঙ্কানদের সামনে ২৫০-এর কাছাকাছি লক্ষ্য দিতে। প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে নামিয়ে টেস্টের চূড়ান্ত দিনে সুযোগ পেলে বল হাতে আবারও নাঈম ও তাইজুলদের ম্যাজিকের অপেক্ষায় থাকবে বাংলাদেশ।
এবি/সিএস