যদি পৃথিবী ৫ সেকেন্ডের জন্য অক্সিজেন হারিয়ে ফেলে?

বি-২ স্টিলথ বোম্বার—যুক্তরাষ্ট্রের এমন এক যুদ্ধবিমান যা রাডার এড়িয়ে নিঃশব্দে আঘাত হানতে পারে। কীভাবে কাজ করে এই রাডার ফাঁকি দেওয়া প্রযুক্তি? কেন এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বোম্বার? এই ভিডিওতে জানুন বি-২ বোম্বারের ইতিহাস, প্রযুক্তি এবং এর ভয়ঙ্কর আঘাত ক্ষমতা।

Jun 28, 2025 - 17:54
 0  1

ধরে নিন হঠাত করে, যদি পৃথিবীর সমস্ত অক্সিজেন হারিয়ে যায়। চিরতরে নয়, মাত্র সেকেন্ডের জন্য।

তাহলে কী হবে?

আমরা কি শুধু শ্বাস বন্ধ করে থাকব?

 বাতাসে কী হবে?

পরিবেশের কী অবস্থা হবে?

আন্তবাণীর আজকের পর্বে, আমরা জানবো কী হবে যদি পৃথিবী মাত্র সেকেন্ডের জন্য অক্সিজেন শূন্য হয়ে যায়।

একবার গভীরভাবে শ্বাস নিন। উপভোগ করুন বুকভরা সতেজ নিঃশ্বাস।

আপনি যে বাতাস নিঃশ্বাসের সাথে বুকে টেনে নিচ্ছেন, তার ২১% হচ্ছে অক্সিজেন। বাকি ৭৮% নাইট্রোজেন।

অক্সিজেন এই গ্রহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসীয় উপাদান।

এটি না থাকলে গাছপালা, প্রাণী, পানি, আর আমরা মানুবজাতিকোনোকিছুই থাকত না।

সেকেন্ডের জন্য অক্সিজেন না থাকা খুব বড় কোনো সমস্যা  মনে নাও হতে পারে।

 কারণ আমরা অনেকেই ৩০ সেকেন্ড শ্বাস না নিয়েও থাকতে পারি।

 তাই আমাদের মানবদেহের পক্ষে তা বুঝে ওঠা সম্ভব নাও হতে পারে।

 কিন্তু পৃথিবীর অন্য সব কিছুর জন্য?  অপেক্ষা করছে ভয়াবহ পরিণতি।

মাত্র সেকেন্ডে পৃথিবীর চেহারা পুরোপুরি বদলে যাবে। অক্সিজেন ছাড়া বুর্জ খলিফা, এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, পদ্মা সেতু সহ যেকোনো কংক্রিটের তৈরি স্থাপনা এক মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ অক্সিজেন কংক্রিটের এই মজবুত বাধনে বিশেষ সহয়তা করে। অক্সিজেন ছাড়া কংক্রিট শুধুই ধুলো ছাড়া কিছু নয়।

বিল্ডিং স্ট্রাকচয়ারের কথায় মনে এলো, কোনো ধাতব পৃষ্ঠ  যদি আনট্রিটেড থাকে, তারা চোখের পলকেই একে অপরের সাথে লেগে যাবে। কারণ ধাতব পদার্থের উপরে অক্সিডেশনের একটি স্তর থাকে, যা তাদের একত্রিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। অক্সিজেন ছাড়া সেই স্তর আর থাকবে না।

ধরে নিন মুহুর্তে আপনি সমুদ্র সৈকতে বিশ্রাম নিচ্ছেন, তাহলে এক ভয়াবহ সানবার্নের জন্য তৈরি থাকুন।

 ওজোন স্তর, যা আমাদের সূর্যের UV রশ্মি থেকে রক্ষা করে, সেটিও তৈরি অক্সিজেন দিয়ে।  অক্সিজেন চলে গেলে, পৃথিবীর বায়ুমন্ডল হবে ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আমাদের আর কোনো সুরক্ষা থাকবে না।

সানবার্নের সাথে সাথে আপনার কানের ভেতরের অংশও ফেটে যেতে পারে। অক্সিজেন হারানো মানে বায়ুচাপের ২১% হারানো। এত বড় পরিবর্তন সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে হঠাৎ করে ২০০০ মিটার নিচে ডাইভ দেয়ার মত চাপের সমান।

আমাদের কান এই হঠাত পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না।

এখনো ভাবছেন কি আর হবে? মাত্র পাঁচ সেকেন্ডইতো! বেশি ভাবতে হবে না কারণ অক্সিজেন ছাড়া আগুন জ্বলবে না।

প্রতিটা যান বাহনের ইঞ্জিনে ফায়ারিং প্রসেস বন্ধ হয়ে যাবে তাৎক্ষনিক।  যে কোনো যানবাহন যা ইলেক্ট্রিক নয়, তা বন্ধ হয়ে যাবে সাথে সাথে। আকাশ থেকে প্লেন পড়ে যাবে সাথে, লাখ লাখ গাড়ি চলতি পথে থেমে যাবে সহসাই।

আকাশ পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যাবে।কারন সূর্যের আলো পৃথিবীতে আসার আগে বাতাসের বিভিন্ন কণার সাথে প্রতিফলিত হয়। অক্সিজেন ছাড়া বাতাসে সেই প্রতিফলন হবে না। ফলে আকাশ অন্ধকার দেখাবে। ঠিক যেমনটা চাঁদের আকাশে দেখায়।

আর হ্যাঁ, এর মধ্যে পৃথিবীর উপরিপৃষ্ঠ যার উপরে আমরা দাঁড়িয়ে থাকি তা ভেঙে পড়বে। কারণ পৃথিবীর ভূত্বকের ৪৫% অক্সিজেন দিয়ে তৈরি। ভূত্বক ভেঙে পড়বে এবং ধীরে ধীরে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।  আপনি আর আমি নিচের দিকে পড়তে থাকব এক অন্তহীন পতনের মধ্যে।

ইন্টারেস্টিং তাই না?  তবে ভাগ্য ভালো যে আমরা এখনো ২১% অক্সিজেন নিয়ে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। এবং উপরে বর্ণিত এই ঘটনা কখনো ঘটবে না। তবে বায়ুদূষণের কারনে অথবা কার্বন নিঃসরণের কারনে ভবিষ্যতের পৃথিবী হতে যাচ্ছে ভয়াবহ। এটা সত্যি এবং এই ভয়াবহতা কি রকমের হবে সেটা বলা যাবে আন্তবানীর আরেকটা গল্পে।