নামের সাথে মিল থাকায় একাধিকবার স্কুলের নাম পরিবর্তন

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে।

Jun 27, 2025 - 19:59
 0  1
নামের সাথে মিল থাকায় একাধিকবার স্কুলের নাম পরিবর্তন

রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। শেখ পরিবারের নামের সঙ্গে মিল থাকার কারণে স্কুলটির নাম বারবার পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

 বিদ্যালয়টির বর্তমান নাম “পাঁচবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়” হলেও এটি প্রথমে “পাঁচবাড়ীয়া হাছিনা ওয়াজেদ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়” নামে ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুনিবর রহমান, যিনি নিজের মা হাছিনা বেগম এবং বাবা ওয়াজেদ আলীর নামেই বিদ্যালয়ের নাম রেখেছিলেন।

 বিদ্যালয়ের জন্য স্থানীয় চারটি পরিবার ৩৩ শতক জমি দান করে এবং তাদের মধ্য থেকে চারজন শিক্ষক নিয়োগ পান। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলফাজ উদ্দিন বলেন, “২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলে গেজেটে দেখা যায়, হাছিনা বানান বদলে ‘হাসিনা’ করে লেখা হয়েছে, যা শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে মিলে যায়।”

সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৮০৮টি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নাম পরিবর্তনের তালিকায় এই বিদ্যালয়টির নামও অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর গত ৫ আগস্টের পর নতুন রেজল্যুশন জারি করে বিদ্যালয়ের নাম বদলে শুধুই “পাঁচবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়” রাখা হয়।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি শৈলন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “শুরুতে এলাকার সবাই মিলে প্রতিষ্ঠাতা কর্মকর্তার বাবা-মায়ের নামে স্কুলের নামকরণে একমত হয়েছিলাম। রাজনৈতিক কারণে বারবার নাম পরিবর্তন এলাকাবাসীর জন্য বিড়ম্বনার।” বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমানও বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ পরিবারের নামের বানানের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় নাম নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।

অথচ স্কুলের নাম একেবারেই প্রতিষ্ঠাতার বাবা-মায়ের নামে ছিল।” পাংশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিদ্যালয়ের নাম পুনরুদ্ধারের দাবিতে মুনিবর রহমান শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিব বরাবর আবেদন করেছেন। আবেদনে তিনি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন, নামটি শেখ হাসিনা বা তার স্বামী ওয়াজেদ আলীর নয়, বরং তার মা-বাবার নামে নির্ভর করে রাখা হয়েছিল।” এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বিদ্যালয়ের নামটি তার প্রকৃত ইতিহাস ও সম্মান বজায় রেখেই পুনর্বহাল করা উচিত।

এবি/এসবিডাব্লিউ