দেহে ঢুকে ক্যান্সার ধ্বংস করবে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘ন্যানোবট বাহিনী’
প্রতিটি ন্যানোবট তৈরি করা হয়েছে আয়রন অক্সাইড দিয়ে এবং বাইরে স্মার্ট পলিমারের একটি আবরণ দেওয়া হয়েছে। ন্যানোবটগুলো শরীরে প্রবেশের পর চুম্বকীয় শক্তির সাহায্যে ক্যান্সার আক্রান্ত স্থানের দিকে চালিত করা হয়। টিউমারের কাছে পৌঁছানোর পর, সেখানে থাকা অ্যাসিডিক বা অম্লীয় পরিবেশ শনাক্ত করে তারা বুঝতে পারে এটি ক্যান্সারের কোষ। তখন ন্যানোবটগুলো একত্রিত হয়ে বড় চেইনের মতো গঠন নেয় এবং টিউমারের কোষের প্রাচীর ছিদ্র করে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর চৌম্বকীয় তরঙ্গের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে তাপ উৎপন্ন করে, যা ক্যান্সার কোষের প্রোটিনগুলো নষ্ট করে দেয় এবং কোষগুলোকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এই প্রক্রিয়ায় আশপাশের সুস্থ কোষগুলো কোনো ক্ষতির মুখে পড়ে না।

আন্তঃবাণী প্রতিবেদঃ
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানের এক গবেষণাগারে বিজ্ঞানীরা ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য এক নতুন ধরনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তারা এমন ক্ষুদ্র ন্যানোবট তৈরি করেছেন, যেগুলো রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের ভেতর টিউমারে পৌঁছে সেটিকে ভেতর থেকে ধ্বংস করতে পারে। এই ন্যানোবটগুলো শুধু ওষুধ পরিবহন করে না, বরং নিজেরাই সরাসরি ক্যান্সার ধ্বংসের কাজ করে।
ন্যানোবট হলো অত্যন্ত ক্ষুদ্র আকারের একটি রোবট বা যন্ত্র, যা সাধারণত মানুষের দৃষ্টিতে দেখা যায় না। এই ধরনের যন্ত্র বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক, চিকিৎসা ও প্রযুক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয়।
প্রতিটি ন্যানোবট তৈরি করা হয়েছে আয়রন অক্সাইড দিয়ে এবং বাইরে স্মার্ট পলিমারের একটি আবরণ দেওয়া হয়েছে। ন্যানোবটগুলো শরীরে প্রবেশের পর চুম্বকীয় শক্তির সাহায্যে ক্যান্সার আক্রান্ত স্থানের দিকে চালিত করা হয়। টিউমারের কাছে পৌঁছানোর পর, সেখানে থাকা অ্যাসিডিক বা অম্লীয় পরিবেশ শনাক্ত করে তারা বুঝতে পারে এটি ক্যান্সারের কোষ। তখন ন্যানোবটগুলো একত্রিত হয়ে বড় চেইনের মতো গঠন নেয় এবং টিউমারের কোষের প্রাচীর ছিদ্র করে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর চৌম্বকীয় তরঙ্গের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে তাপ উৎপন্ন করে, যা ক্যান্সার কোষের প্রোটিনগুলো নষ্ট করে দেয় এবং কোষগুলোকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এই প্রক্রিয়ায় আশপাশের সুস্থ কোষগুলো কোনো ক্ষতির মুখে পড়ে না।
চিকিৎসা শেষ হলে ন্যানোবটগুলো ভেঙে পড়ে এবং আয়ন রূপে শরীরে শোষিত হয়ে যায়, ফলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয় না। ইঁদুরের ওপর করা প্রাথমিক পরীক্ষায় মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে টিউমার ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষয় হয়ে গেছে এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি কেমোথেরাপির মতো পুরো শরীরে ছড়িয়ে না পড়ে কেবল ক্যান্সারের নির্দিষ্ট স্থানে কাজ করে। ভবিষ্যতে এই ন্যানোবটগুলো দিয়ে রোগ শনাক্তকরণের জন্য রঙিন ডাই বা ক্যান্সারের জিন বন্ধ করার মতো RNA পরিবহন করানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য শুধু ক্যান্সার চিকিৎসা নয়, বরং এমন প্রযুক্তি তৈরি করা, যা নিজে নিজেই ক্যান্সার কোষ খুঁজে বের করে, সেখানে প্রবেশ করে এবং ধ্বংস করে দিতে পারবে।
এবি/এসএফ