যে পাঁচ শ্রেণির করদাতাকে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দিল এনবিআর
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পাঁচ শ্রেণির করদাতাকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় দিয়েছে

আন্তঃবাণী ডেস্ক:
বাংলাদেশে কর ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তরের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি সকল ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি, করদাতাদের সক্ষমতা এবং বিশেষ চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আজ সোমবার (১১ আগস্ট) এনবিআর নতুন এক বিশেষ আদেশ জারি করে পাঁচ শ্রেণির করদাতাকে এই বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে এটি কার্যকর হবে অবিলম্বে এবং কেবল নির্দিষ্ট শ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী,যে পাঁচটি শ্রেণির করদাতাদের রাখা হয়েছে -
১. প্রবীণ করদাতা: বয়স ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব।
২. শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা: প্রয়োজনীয় সনদপত্র জমা সাপেক্ষে।
৩. বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা: যারা বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন।
৪. মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধি: মৃত করদাতার পক্ষ থেকে আয়কর রিটার্ন দাখিলকারী।
৫.বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক।
তবে এরা চাইলে স্বেচ্ছায় অনলাইন পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
এর আগে, ৩ আগস্ট এনবিআর ঘোষণা দিয়েছিল-সারা দেশের সব ব্যক্তি করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে এবং এ জন্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট (www.etaxnbr.gov.bd) ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এনবিআর জানিয়েছে যদি কোনো করদাতা ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন বা লগইন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে অনলাইন রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদন যাচাই করে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে কাগুজে রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে কর প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয় করদাতাদের সময় ও খরচ বাঁচাতে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে। গত বছর সীমিত পরিসরে ব্যক্তিশ্রেণির জন্য অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হলে প্রায় ১৭ লাখ করদাতা ই-রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন, যা এনবিআরের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ছিল।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত কর ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপ নিশ্চিত করবে। বিশেষ করে প্রবীণ ও প্রযুক্তিতে অনভিজ্ঞ করদাতাদের জন্য এটি স্বস্তি বয়ে আনবে। পাশাপাশি, ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত হতে না পারা প্রবাসী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতারা সময় ও ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন।
এবি/এএ