মেয়ে সন্তানের জন্ম তাই জামাইয়ের 'উপহার' মিষ্টির বদলে পাঠাল মাটি ও ইটের গুঁড়া
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামে কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে অভিযুক্ত জামাই মোকছেদুল ইসলাম শ্বশুরবাড়িতে মিষ্টির প্যাকেটের ভেতর মাটি ও ইটের গুঁড়া পাঠান

আন্তঃবানী ডেস্ক:
কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে মিষ্টির প্যাকেটের ভেতর পাঠানো হলো মাটি আর ইটের গুঁড়া!
এমনই চরম অবমাননাকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নে। ‘উপহার’ খোলার পর যা দেখা যায়, তা দেখে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো পরিবার। এরপর রোববার (১৫ জুন) ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়। যা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামে। এক বছর আগে আছমা খাতুনের বিয়ে হয় বড় ধনতোলা এলাকার মোকছেদুল ইসলামের সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী তাকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ। সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে বাড়ে মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন।
গত বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মোকছেদুল শ্বশুরবাড়িতে উপস্থিত হয়ে শাশুড়ির হাতে একটি ‘মিষ্টির কার্টন’ তুলে দেন। কিন্তু কার্টনটি খোলার পর দেখা যায় সেখানে মিষ্টির বদলে রয়েছে মাটি ও ইটের গুঁড়ো! বিষয়টি জানাজানি হতেই গোটা এলাকা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
নতুন মা আছমা খাতুন বলেন, “বিয়ের পর থেকেই সে আমাকে টাকার জন্য মারধর করত। গর্ভে সন্তান আসার পর জানিয়ে দিয়েছিল, তিনি বলতেন, ছেলে হলে সুখ পাবে, মেয়ে হলে দুঃখ।এখন মেয়ে হয়েছে, তাই এই অপমান।”
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে জামাই মোকছেদুল দাবি করেন, “আমি এক কেজি মিষ্টি আর মেয়ের কিছু জামা নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন তারা নাটক সাজিয়ে আমাকে দোষারোপ করছে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।” স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সাঈদ জানান, তিনি সরাসরি ঘটনার সাক্ষী নন, তবে শুনেছেন এবং খোঁজখবর নিচ্ছেন।
এলাকাবাসীর মতে, এটি নারীর প্রতি ঘৃণা ও সহিংসতার এক নির্মম দৃষ্টান্ত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে ঘিরে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
এই ঘটনা আমাদের সমাজে নারীর অবস্থান ও কন্যাসন্তানকে ঘিরে গড়ে ওঠা কুৎসিত মনোভাবের নগ্ন প্রতিচ্ছবি ।
এবি/এএ